জমি না কিনে কিভাবে বাড়ি বানাবো এই বিষয়ে জানার আগ্রহ দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। অনেকেই জানতে চান, কীভাবে নিজ জমি ছাড়াই বাড়ি বানানো সম্ভব। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাসস্থান। অন্ন-বস্ত্রের পরপরই রয়েছে বাসস্থানের প্রয়োজনীয়তা। তাই যতই দিন যাচ্ছে মানুষ নিজের স্থায়ী বাড়ি বানানোর ব্যাপারে চিন্তাশীল হচ্ছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ ভূমিহীন হচ্ছে, নদী ভাঙ্গন সহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হারাচ্ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে জমি না কিনে কিভাবে বাড়ি বানানো যায় সেই প্রশ্নটি অনেকেই গুগলে সার্চ করে জানতে চান।
সরকারি সহায়তা দ্বারা জমি না কিনে বাড়ি বানানো
বাংলাদেশে বসবাস করে আপনি যদি মনে করেন যে জমি না কিনে কিভাবে বাড়ি বানাবো বা আমার কোনো জমি নেই আমি কি বাড়ি বানাতে পারবো, তাহলে উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ, আপনি জমি না কিনেও বাড়ি বানাতে পারবেন। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম-নীতি মানতে হবে।
জমি না কিনে বাড়ি বানানোর প্রথম শর্ত হচ্ছে আপনাকে ভূমিহীন হতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ভূমিহীনদের সহায়তা করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় সরকার নানা কারণে ভূমিহীন হওয়া লোকদেরকে খাস জমি প্রদান করবে এবং ঐ জমিতে তারা বাড়ি বানাতে পারবে।
ভূমিহীন হিসেবে জমির জন্য আবেদন করতে পারবেন যারা:
1. যার নিজ বসত বাড়ি বা কৃষিজমি কোনটাই নেই (যে কোন কারণেই হতে পারে)।
2. পরিবারের আয়ের উৎস কৃষি অর্থাৎ আপনার পরিবারটি কৃষি নির্ভর হতে হবে।
3. ১০ শতাংশ বসতবাড়ি আছে, কিন্তু যদি কোনো কৃষি জমি না থাকে তবে।
উপরে উল্লেখিত কারণগুলো যদি আপনার সাথে মিলে যায়, তবে আপনি সরকারি খাস জমি পেতে পারেন। তবে এজন্য আপনার নিজ এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সরকারি খাস জমি থাকতে হবে, অন্যথায় জমি না কিনে বাড়ি বানানো আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে।
মূলত পরিত্যক্ত সরকারি খাস জমিতে ভূমিহীন ব্যক্তিদের জন্য সরকার বাড়ি বানানোর জন্য অনুমতি দিয়ে থাকেন। উপজেলা নির্বাহি অফিসার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাস জমি প্রদান করে থাকবেন আগ্রহী ভূমিহীন ব্যক্তিদের।
খাস জমি: ভূমিহীনদের জন্য সরকারি সহায়তা
বাংলাদেশে ভূমিহীন জনগণের একটি বড় অংশ রয়েছে যারা নানা কারণে তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন। এই জনগণের জন্য বাংলাদেশ সরকার খাস জমি বরাদ্দ করে থাকে। খাস জমি হল সেই জমি যা সরকারের মালিকানাধীন এবং কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে এই খাস জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া এবং শর্তাবলী নির্ধারিত হয়েছে।
খাস জমি পাওয়ার শর্তাবলী
খাস জমি পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। নিম্নলিখিত ক্যাটাগরির মানুষ খাস জমির জন্য আবেদন করতে পারেন:
1. কৃষি জমিহীন ও বাস্তুভিটা জমিহীন পরিবার: যাদের নিজস্ব কোনো কৃষি জমি বা বসতভিটা নেই, তারা খাস জমির জন্য আবেদন করতে পারেন।
2. নদী ভাঙ্গনে বাড়িঘর হারানো পরিবার: যারা নদী ভাঙ্গনের কারণে তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন, তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
3. দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার: মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল, তাদের জন্য খাস জমি বরাদ্দের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
4. বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা মহিলা: আর্থিকভাবে অসচ্ছল বিধবা এবং স্বামী পরিত্যাক্তা মহিলারাও খাস জমির জন্য আবেদন করতে পারেন।
খাস জমি বরাদ্দ প্রক্রিয়া
খাস জমি বরাদ্দের প্রক্রিয়া কিছু ধাপ অনুসরণ করে সম্পন্ন হয়:
1. আবেদনপত্র জমা: ভূমিহীন ব্যক্তিরা তাদের এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদনপত্র জমা দিতে পারেন। আবেদনপত্রে তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা এবং ভূমিহীনতার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
2. যাচাই-বাছাই: আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর, ইউএনও এবং স্থানীয় প্রশাসন আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করেন। যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা হয়।
3. বরাদ্দ: যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে খাস জমি বরাদ্দ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবচেয়ে অসহায় এবং যোগ্য ব্যক্তিদের আগে জমি দেওয়া হয়।
খাস জমি প্রাপ্তির সুবিধা
খাস জমি প্রাপ্তি ভূমিহীনদের জন্য এক বিশাল সুযোগ। এই জমিতে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারেন এবং কৃষি কাজ করতে পারেন। এটি তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সহায়ক হতে পারে এবং তাদের সামাজিক স্থিতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
আর পড়ুন
জমির খাজনা চেক করার নিয়ম
বেসরকারি আবাসন প্রকল্পে জমি না কিনে কিভাবে বাড়ি বানানো?
বেসরকারি আবাসন প্রকল্পগুলির মাধ্যমে জমি না কিনেও বাড়ি বানানো বা পাওয়া সম্ভব। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আয়ের উপর ভিত্তি করে ভাড়া বা কিস্তিতে বাড়ি সরবরাহ করে। এই প্রকল্পগুলোতে কিছু শর্ত থাকে এবং সকলের জন্য সাশ্রয়ী নাও হতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা হলো:
-
আয়ের ভিত্তিতে বাড়ি: কিছু বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠান আয়ের উপর ভিত্তি করে বাড়ি সরবরাহ করে। এতে আপনি আপনার আয় অনুযায়ী মাসিক ভাড়া বা কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন।
-
ভাড়া বা কিস্তিতে বাড়ি: বেসরকারি আবাসন প্রকল্পগুলিতে বাড়ি ভাড়া বা কিস্তিতে পাওয়া যায়, যা আপনাকে জমি না কিনেই বাড়ির মালিকানা অর্জনে সহায়তা করে। আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করে শেষ পর্যন্ত বাড়ির মালিক হতে পারেন।
-
প্রকল্পের শর্তাবলী: এই ধরণের প্রকল্পগুলির কিছু শর্তাবলী থাকে, যেমন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে, নির্দিষ্ট আয় থাকলে তবেই যোগ্য হবেন ইত্যাদি। এসব শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক।
-
সাশ্রয়ী না হতে পারে: যদিও এই প্রকল্পগুলো অনেকের জন্য সুবিধাজনক, কিন্তু সকলের জন্য সাশ্রয়ী নাও হতে পারে। আয় এবং অন্যান্য শর্ত পূরণ না করলে এই সুবিধা পাওয়া কঠিন হতে পারে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:
-
প্রকল্প নির্বাচন: আপনার আয় ও প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত প্রকল্পটি নির্বাচন করুন।
-
পরিদর্শন: প্রকল্পটি পরিদর্শন করে এর সুবিধা ও শর্তাবলী সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
-
চুক্তি: সমস্ত শর্তাবলী এবং কিস্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে সঠিকভাবে বুঝে চুক্তি সম্পাদন করুন।
-
রক্ষণাবেক্ষণ: কিস্তিতে বাড়ি নেওয়ার পর রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য খরচ সম্পর্কে নিশ্চিত থাকুন।
এইভাবে, বেসরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে জমি না কিনেও বাড়ি বানানো বা পাওয়া সম্ভব। তবে, সমস্ত শর্তাবলী সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
ভাসমান বাড়ি তৈরি করে জমি না কিনে বাড়ি বানানো
ভাসমান বাড়ি একটি অনন্য এবং সৃজনশীল উপায় জমি না কিনেও বাড়ি তৈরি করার জন্য। বিশেষ করে নদী বা জলাশয়ের কাছাকাছি এলাকায় এটি বেশ জনপ্রিয়। নিচে ভাসমান বাড়ি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হলো:
-
ভাসমান বাড়ির ধারণা: ভাসমান বাড়ি মূলত পানির উপর তৈরি করা হয়, যা নৌকার মতো ভেসে থাকে। এটি স্থলভাগে তৈরি বাড়ির মতোই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গঠিত, তবে এটি পানির উপর স্থাপন করা হয়।
-
নির্মাণ ও নকশা:
- প্ল্যাটফর্ম: প্রথমে একটি মজবুত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হয় যা পানিতে ভাসতে পারে। এটি সাধারণত কাঠ, স্টিল বা কংক্রিটের তৈরি হয়।
- বাড়ির কাঠামো: প্ল্যাটফর্মের উপর বাড়ির কাঠামো তৈরি করা হয়। এটি একটি সাধারণ বাড়ির মতোই, তবে হালকা উপকরণ ব্যবহার করা হয় যাতে প্ল্যাটফর্মের ওজন সহ্য করতে পারে।
- প্লাম্বিং ও ইলেকট্রিসিটি: পানির উৎস ও বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়।
-
সুবিধা:
- জমি কিনতে হবে না: ভাসমান বাড়ি বানানোর জন্য জমি কেনার প্রয়োজন নেই, যা খরচ কমিয়ে দেয়।
- পরিবেশবান্ধব: এটি পরিবেশবান্ধব এবং কম স্থান নেয়, যা প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর কম প্রভাব ফেলে।
- স্থাপনযোগ্য: ভাসমান বাড়ি সহজেই স্থানান্তর করা যায়, যা বিভিন্ন স্থানে বসবাসের সুবিধা দেয়।
-
অসুবিধা:
- রক্ষণাবেক্ষণ: ভাসমান বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত খরচ বেশি হতে পারে। বিশেষত, পানির সাথে যোগাযোগ থাকায় কাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি।
- সুবিধা সীমাবদ্ধতা: পানির উপরে বসবাসের ফলে কিছু সুবিধা সীমাবদ্ধ হতে পারে, যেমন স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা।
-
উপযুক্ত স্থান: ভাসমান বাড়ি তৈরি করার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, নদী, লেক বা অন্যান্য স্থিতিশীল জলাশয়ের কাছাকাছি স্থান নির্বাচন করতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- নকশা ও পরিকল্পনা: ভালোভাবে পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বাড়ি স্থিতিশীল ও নিরাপদ থাকে।
- আইনি অনুমোদন: স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হবে।
- রক্ষণাবেক্ষণ: নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনা থাকা উচিত।
ভাসমান বাড়ি তৈরি করা জমি না কিনেও বসবাসের একটি সৃজনশীল উপায় হতে পারে, তবে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ভালোভাবে বিবেচনা করা জরুরি।
গাছের বাড়ি তৈরি করে জমি না কিনে বাড়ি বানানো
গাছের বাড়ি একটি সৃজনশীল ও পরিবেশবান্ধব উপায় জমি না কিনেই বাড়ি তৈরি করার। এটি প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে বসবাসের একটি অনন্য সুযোগ দেয়। নিচে গাছের বাড়ি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হলো:
-
গাছের বাড়ির ধারণা: গাছের বাড়ি মূলত একটি বড় ও শক্তিশালী গাছের উপর তৈরি করা হয়। এটি গাছের শাখা-প্রশাখার উপর স্থাপন করা হয় এবং পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়।
2.নির্মাণ ও নকশা:
- গাছের নির্বাচন: প্রথমে একটি বড় ও শক্তিশালী গাছ নির্বাচন করতে হবে, যা বাড়ির ওজন বহন করতে সক্ষম।
- বাড়ির কাঠামো: গাছের শাখাগুলির উপর একটি মজবুত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। এর উপর বাড়ির কাঠামো স্থাপন করা হয়, যা হালকা ও টেকসই উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়।
- নিরাপত্তা: গাছের বাড়ি তৈরিতে নিরাপত্তার দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হয়। শাখাগুলির সঠিক সংযোগ ও মজবুত কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।
3.সুবিধা:
-
- পরিবেশবান্ধব: গাছের বাড়ি তৈরি করতে পরিবেশের উপর কম প্রভাব পড়ে। এটি প্রাকৃতিক পরিবেশে তৈরি হয় এবং পরিবেশকে সংরক্ষণে সহায়ক।
- খরচ কম: গাছের বাড়ি তৈরিতে জমি কেনার প্রয়োজন হয় না, যা খরচ কমিয়ে দেয়।
- প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: গাছের বাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হয়, যা বাসিন্দাদের মানসিক প্রশান্তি দেয়।
4.অসুবিধা:
-
- টেকসই না হতে পারে: গাছের বাড়ি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন ঝড় বা প্রবল বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- সীমিত স্থান: গাছের বাড়ির স্থান সীমিত হতে পারে, যা বড় পরিবারের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।
- নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ: গাছের বাড়ির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন, যেমন কাঠামো মজবুত রাখা, শাখাগুলি পরীক্ষা করা ইত্যাদি।
- 5.উপযুক্ত স্থান: গাছের বাড়ি তৈরির জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। একটি বড় ও মজবুত গাছ এবং এর আশেপাশের পরিবেশ সঠিকভাবে বিবেচনা করতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- নকশা ও পরিকল্পনা: ভালোভাবে পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বাড়ি স্থিতিশীল ও নিরাপদ থাকে।
- আইনি অনুমোদন: স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হবে।
- নিরাপত্তা: বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গাছের বাড়ি পরিবেশবান্ধব, খরচ সাশ্রয়ী এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে একাত্ম হয়ে বসবাসের একটি সুন্দর উপায় হতে পারে। তবে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ভালোভাবে বিবেচনা করা জরুরি।
বন্ধু বা আত্মীয়ের জায়গায় জমি না কিনে বাড়ি বানানো
বন্ধু বা আত্মীয়ের জায়গায় বাড়ি বানানো জমি না কিনে নিজের বাড়ি বানানোর একটি চমৎকার উপায় হতে পারে। তবে, এই প্রক্রিয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করতে হয়। নিচে এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উল্লেখ করা হলো:
-
আলোচনা ও সম্মতি:
- প্রথমে বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে আলোচনা করুন এবং তাদের সম্মতি নিন। এটি মৌখিক বা লিখিতভাবে করা যেতে পারে, তবে লিখিত চুক্তি করা সেরা পদ্ধতি।
- জমির মালিকের সাথে সমস্ত শর্তাবলী স্পষ্টভাবে আলোচনা করুন, যাতে ভবিষ্যতে কোন ভুল বোঝাবুঝি না হয়।
-
লিখিত চুক্তি:
- একটি লিখিত চুক্তি তৈরি করুন যেখানে জমির মালিক ও বাড়ির মালিকের অধিকার ও দায়িত্ব স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
- চুক্তিতে জমির ব্যবহার, নির্মাণ প্রক্রিয়া, খরচ বণ্টন, ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণ এবং যদি কখনো জমি বিক্রি করতে হয়, তার শর্তাবলী উল্লেখ করুন।
-
প্রকল্প পরিকল্পনা:
- বাড়ির নকশা ও পরিকল্পনা করুন। এটি আপনার এবং জমির মালিকের প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী হতে পারে।
- স্থপতি বা প্রকৌশলীর সাথে পরামর্শ করুন যাতে বাড়ির কাঠামো মজবুত ও নিরাপদ হয়।
-
আইনি অনুমোদন:
- স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হবে।
- জমির মালিকানা ও নির্মাণের বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে।
-
নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ:
- নির্মাণ কাজ শুরু করার আগে সমস্ত প্রস্তুতি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করুন।
- নির্মাণ কাজের সময় জমির মালিক ও অন্যান্য প্রতিবেশীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করুন।
- বাড়ি নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিন।
সুবিধা:
- কম খরচ: জমি কেনার প্রয়োজন না থাকায় খরচ কম হয়।
- নিরাপত্তা: পরিচিত পরিবেশে বাড়ি হওয়ায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।
- সম্পর্ক বৃদ্ধি: বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত হয়।
অসুবিধা:
- সম্পর্কের সমস্যা: ভবিষ্যতে জমি বা বাড়ি নিয়ে বন্ধু বা আত্মীয়ের সাথে সম্পর্কের সমস্যা হতে পারে।
- আইনি ঝামেলা: যদি চুক্তি সঠিকভাবে না করা হয়, তবে আইনি ঝামেলা হতে পারে।
- স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা: জমির মালিকের শর্তাবলী ও পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হতে পারে, যা আপনার স্বাধীনতা সীমিত করতে পারে।
বন্ধু বা আত্মীয়ের জায়গায় বাড়ি বানানো একটি কার্যকর ও সাশ্রয়ী উপায় হতে পারে, তবে সমস্ত শর্তাবলী ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নিয়ে এবং লিখিত চুক্তির মাধ্যমে কাজ করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কোন সমস্যা না হয়।
উপসংহার
বাংলাদেশে খাস জমি বরাদ্দ ভূমিহীনদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি উদ্যোগ। ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং সামাজিক স্থিতি নিশ্চিত করা এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য। যদি আপনি ভূমিহীনদের তালিকায় পড়েন, তবে আপনার উচিত আপনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে খাস জমির জন্য আবেদন করা। এই সুযোগটি ব্যবহার করে আপনি একটি স্থায়ী আশ্রয় পেতে পারেন এবং নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারেন।