মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন: আইনি নিয়ম ও পদ্ধতি

মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন: আইনি নিয়ম ও পদ্ধতি

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল প্রক্রিয়া, বিশেষত যখন উত্তরাধিকারী পরিবারের সদস্যরা নিকটাত্মীয় হন। মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে পরিবারে প্রায়ই জটিলতা দেখা দেয়, যা আইন অনুযায়ী সমাধান করতে হয়।বাংলাদেশে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে মুসলিম আইন, হিন্দু আইন, এবং সাধারণ আইন (যারা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় আইন অনুসরণ করেন না) অনুযায়ী বিভিন্ন নিয়ম প্রযোজ্য হয়।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন (Islamic Inheritance Law) মুসলিম শরীয়াহ বা ইসলামী বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়, যা কুরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে তৈরি। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গতভাবে বণ্টন করা। এই আইনটি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত, কারণ এটি পরিবারে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এবং সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূলনীতি

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তার নিকটস্থ আত্মীয়দের মধ্যে ভাগ করা হয়, যা কুরআনে বর্ণিত সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলীর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। প্রধানত দুই ধরনের উত্তরাধিকারী রয়েছেন:

  1. ফারাইয (অনির্দিষ্ট অংশের অধিকারী): যাদের কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে নির্ধারিত নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে।
  2. আসাবা (অবশিষ্ট অংশের অধিকারী): যাদের নির্দিষ্ট অংশ নেই, তবে ফারাইযদের পর অবশিষ্ট সম্পত্তি তাদের মধ্যে বণ্টিত হয়।

সম্পত্তি বণ্টনের সাধারণ প্রক্রিয়া

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী, সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হয়:

  1. মৃত ব্যক্তির দেনা পরিশোধ: প্রথমত, মৃত ব্যক্তির দেনা পরিশোধ করতে হয়। ইসলামে দেনা পরিশোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি সম্পত্তি বণ্টনের আগে করতে হবে।

  2. ওয়াসিয়াত বা ইচ্ছাপত্র: যদি মৃত ব্যক্তি কোনো ওয়াসিয়াত করে যান (কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বা ব্যক্তির জন্য সম্পত্তির একটি অংশ বরাদ্দ করেন), তবে দেনা পরিশোধের পরে, তার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। তবে এই ইচ্ছাপত্রে উত্তরাধিকারীরা (যারা আইনের অধীনে উত্তরাধিকারী) কোনো অংশ পাবেন না।

  3. অবশিষ্ট সম্পত্তির বণ্টন: দেনা ও ওয়াসিয়াত পরিশোধের পরে যা অবশিষ্ট থাকে, তা কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী ফারাইয ও আসাবা’র মধ্যে বণ্টিত হয়।

উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তির বণ্টন

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, নির্দিষ্ট আত্মীয়রা উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য হন। তারা একাধিক ক্যাটেগরিতে বিভক্ত, এবং তাদের মধ্যে সম্পত্তির অংশ বিভিন্নভাবে বণ্টিত হয়।

১. স্ত্রী বা স্বামী

  • যদি মৃত ব্যক্তির স্ত্রী জীবিত থাকেন, তবে তিনি মৃত স্বামীর সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ (১/৮) পাবেন, যদি স্বামীর সন্তান থাকে। যদি সন্তান না থাকে, তবে তিনি এক-চতুর্থাংশ (১/৪) পাবেন।
  • মৃত স্ত্রীর ক্ষেত্রে, স্বামী তার সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ (১/৪) পাবে, যদি স্ত্রীর সন্তান থাকে। সন্তান না থাকলে স্বামী অর্ধেক (১/২) সম্পত্তি পাবে।

২. সন্তান

  • পুত্ররা কুরআন অনুসারে মেয়েদের তুলনায় দ্বিগুণ অংশ পাবে। অর্থাৎ, যদি একটি পুত্র এবং একটি কন্যা থাকে, তবে পুত্র ২:১ অনুপাতে অংশ পাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ৩০০ টাকা হয়, তাহলে পুত্র ২০০ টাকা পাবে এবং কন্যা ১০০ টাকা পাবে।

৩. বাবা-মা

  • যদি সন্তান থাকে, তবে মা সম্পত্তির এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬) পাবেন এবং বাবা এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬) পাবেন।
  • যদি কোনো সন্তান না থাকে, তবে মা এক-তৃতীয়াংশ (১/৩) সম্পত্তি পাবেন এবং বাবা অবশিষ্ট অংশ পাবে।

৪. ভাইবোন

  • যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান বা নিকটস্থ উত্তরাধিকারী না থাকে, তবে তার ভাইবোন সম্পত্তি পাবে। এক্ষেত্রে পুত্র সন্তান না থাকলে ভাইরা মেয়েদের তুলনায় দ্বিগুণ অংশ পাবে।

অন্যান্য বিষয়

  • আসাবা: যদি কেউ ফারাইয হিসেবে উত্তরাধিকারী না হন, তবে আসাবা হিসেবে তারা অবশিষ্ট সম্পত্তি পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, মৃত ব্যক্তির সন্তান বা বাবা-মা না থাকলে, তার ভাইবোনরা আসাবা হিসেবে সম্পত্তি পাবে।
  • দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান: একাধিক স্ত্রীর সন্তান থাকলে, প্রতিটি সন্তানের উত্তরাধিকার একই নিয়মে হবে, অর্থাৎ পুত্ররা দ্বিগুণ পাবে, কন্যারা অর্ধেক পাবে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন একটি সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সম্পত্তি বণ্টনের নিয়ম নির্ধারণ করে। এই আইনটি সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং পরিবারের মধ্যে সম্পদের সঠিক বণ্টন করতে সহায়ক। শরীয়াহ আইন অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে, যেকোনো ধরনের জটিলতা বা বিরোধ দেখা দিলে, একটি অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

হিন্দু এবং অন্যান্য আইন অনুসারে সম্পত্তি বণ্টন

বাংলাদেশে মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য সম্পত্তি বণ্টনে পৃথক আইন রয়েছে। প্রতিটি ধর্মের জন্য নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার আইন আছে যা সেই ধর্মের প্রথা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভিত্তিতে তৈরি। এখানে হিন্দু ও অন্যান্য আইন অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টনের বিভিন্ন দিক আলোচনা করা হলো।

হিন্দু উত্তরাধিকার আইন

বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইনটি হলো হিন্দু উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৯ এবং হিন্দু মহিলা উত্তরাধিকার আইন, ১৯৩৭। এই আইনগুলো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে প্রণীত এবং এখনো বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তরাধিকার বণ্টনের ক্ষেত্রে কার্যকর।

১. যৌথ পরিবার ও সম্পত্তির ধারণা

হিন্দুদের মধ্যে সম্পত্তির বণ্টন অনেকটা যৌথ পরিবারের ওপর নির্ভরশীল। যৌথ পরিবারে পুরুষ সদস্যরা যৌথ সম্পত্তির অংশীদার হন, এবং পরিবারের যে কোনো সদস্য মারা গেলে তার অংশের সম্পত্তি অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে বণ্টিত হয়। তবে, ১৯৫৬ সালের আগে, মেয়েরা সাধারণত পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য হতেন না।

২. পুত্রদের উত্তরাধিকার

হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে পুত্ররা পরিবারের পৈতৃক সম্পত্তির স্বাভাবিক উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত হন। যৌথ পরিবারের ক্ষেত্রে, পুত্ররা সমান অংশে সম্পত্তি পান।

৩. কন্যাদের উত্তরাধিকার

১৯৫৬ সালে ভারতের হিন্দু উত্তরাধিকার আইন প্রবর্তনের মাধ্যমে কন্যাদের উত্তরাধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়, যদিও বাংলাদেশে এই আইনটি হুবহু কার্যকর নয়। বাংলাদেশে হিন্দু মহিলা উত্তরাধিকার আইন, ১৯৩৭ অনুযায়ী, কন্যারা সাধারণত বিবাহিত হলে পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন না। তবে অবিবাহিত বা বিধবা কন্যারা তাদের পিতার সম্পত্তিতে অংশ পেতে পারেন।

৪. স্ত্রী (মহিলা) এবং বিধবা কন্যা

  • স্ত্রীর ক্ষেত্রে, যদি তিনি তার স্বামীকে পূর্বে হারান, তবে তিনি স্বামীর সম্পত্তির অর্ধেক অংশের উত্তরাধিকারী হন।
  • অবিবাহিত কন্যা এবং বিধবা কন্যা পিতার সম্পত্তির একটি অংশের জন্য যোগ্য হতে পারেন।

৫. ভাই ও বোনের অংশ

হিন্দু আইন অনুসারে, ভাইরা পৈতৃক সম্পত্তির প্রধান উত্তরাধিকারী। বোনরা সাধারণত উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য হন না, তবে কিছু ক্ষেত্রে অবিবাহিত বা বিধবা বোনদের অংশ দেওয়া হয়।

খ্রিস্টান উত্তরাধিকার আইন

বাংলাদেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫ প্রযোজ্য। এই আইনে সম্পত্তির বণ্টন মুসলিম এবং হিন্দু আইনের তুলনায় ভিন্ন। এখানে পুরুষ ও নারীর মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয় না এবং সন্তানরা সমানভাবে সম্পত্তি পায়।

১. সম্পত্তির বণ্টন

  • স্ত্রী বা স্বামী: স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকলে, তিনি মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ (১/৩) পাবেন।
  • সন্তানরা: সন্তানরা অবশিষ্ট দুই-তৃতীয়াংশ (২/৩) সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করে নেবে, যেকোনো লিঙ্গের হোক না কেন।

২. বাবা-মা এবং ভাইবোন

  • যদি সন্তান না থাকে, তাহলে মৃত ব্যক্তির বাবা-মা বা ভাইবোনরা সমানভাবে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন।

বৌদ্ধ উত্তরাধিকার আইন

বাংলাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনো উত্তরাধিকার আইন নেই, তবে হিন্দু আইন এবং সাধারণ উত্তরাধিকার আইনের নিয়মাবলী অনুসরণ করা হয়। পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হিন্দু আইনের ধাঁচে করা হয়।

বিশেষ বিষয়

  • ওয়িল বা ইচ্ছাপত্র: হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে ইচ্ছাপত্রের মাধ্যমে সম্পত্তি বণ্টন করা একটি সাধারণ প্রথা। ইচ্ছাপত্র না থাকলে, উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টিত হয়।
  • আদালতের সিদ্ধান্ত: যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে, আদালতের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। বিশেষত, উত্তরাধিকার নিয়ে কোনো বিতর্ক হলে আদালত সাধারণ আইন এবং প্রাসঙ্গিক ধর্মীয় আইনের ভিত্তিতে রায় প্রদান করে।

উপসংহার

হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের নিয়মগুলো ভিন্ন হলেও প্রতিটি আইনের মূল লক্ষ্য হলো ন্যায়সঙ্গতভাবে সম্পত্তি ভাগ করা। হিন্দুদের ক্ষেত্রে পুত্ররা প্রথাগতভাবে বেশি অংশ পেলেও সাম্প্রতিককালে কিছু পরিবর্তন এসেছে, যেখানে কন্যারা সম্পত্তিতে অংশ পেতে পারেন। খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে, সমানভাবে সম্পত্তি বণ্টনের নিয়ম প্রচলিত, যা লিঙ্গভেদে কোনো পার্থক্য করে না।

রেফারেন্স:

  • “কুরআন ও হাদিস ভিত্তিক উত্তরাধিকার আইন” – ইসলামী শরীয়াহ শিক্ষা।
  • “মুসলিম উত্তরাধিকার আইন এবং সম্পত্তি বণ্টন” – বাংলাদেশ লিগ্যাল অ্যাডভাইসরি ফোরাম।
  • “হিন্দু উত্তরাধিকার আইন” – বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ।
  • “খ্রিস্টান উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫” – বাংলাদেশ খ্রিস্টান আইন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্র।
  • “বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উত্তরাধিকার আইন” – বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয়।
Summary
মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন: আইনি নিয়ম ও পদ্ধতি
Article Name
মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন: আইনি নিয়ম ও পদ্ধতি
Description
মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল প্রক্রিয়া, বিশেষত যখন উত্তরাধিকারী পরিবারের সদস্যরা নিকটাত্মীয় হন। মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে পরিবারে প্রায়ই জটিলতা দেখা দেয়, যা আইন অনুযায়ী সমাধান করতে হয়।বাংলাদেশে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে মুসলিম আইন, হিন্দু আইন, এবং সাধারণ আইন (যারা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় আইন অনুসরণ করেন না) অনুযায়ী বিভিন্ন নিয়ম প্রযোজ্য হয়। মুসলিম উত্তরাধিকার আইন মুসলিম উত্তরাধিকার আইন (Islamic Inheritance Law) মুসলিম শরীয়াহ বা ইসলামী বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়, যা কুরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে তৈরি। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গতভাবে বণ্টন করা। এই আইনটি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত, কারণ এটি পরিবারে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এবং সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করে। মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের মূলনীতি মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি তার নিকটস্থ আত্মীয়দের মধ্যে ভাগ করা হয়, যা কুরআনে বর্ণিত সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলীর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়। প্রধানত দুই ধরনের উত্তরাধিকারী রয়েছেন: ফারাইয (অনির্দিষ্ট অংশের অধিকারী): যাদের কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে নির্ধারিত নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে। আসাবা (অবশিষ্ট অংশের অধিকারী): যাদের নির্দিষ্ট অংশ নেই, তবে ফারাইযদের পর অবশিষ্ট সম্পত্তি তাদের মধ্যে বণ্টিত হয়। সম্পত্তি বণ্টনের সাধারণ প্রক্রিয়া মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী, সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হয়: মৃত ব্যক্তির দেনা পরিশোধ: প্রথমত, মৃত ব্যক্তির দেনা পরিশোধ করতে হয়। ইসলামে দেনা পরিশোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি সম্পত্তি বণ্টনের আগে করতে হবে। ওয়াসিয়াত বা ইচ্ছাপত্র: যদি মৃত ব্যক্তি কোনো ওয়াসিয়াত করে যান (কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে বা ব্যক্তির জন্য সম্পত্তির একটি অংশ বরাদ্দ করেন), তবে দেনা পরিশোধের পরে, তার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। তবে এই ইচ্ছাপত্রে উত্তরাধিকারীরা (যারা আইনের অধীনে উত্তরাধিকারী) কোনো অংশ পাবেন না। অবশিষ্ট সম্পত্তির বণ্টন: দেনা ও ওয়াসিয়াত পরিশোধের পরে যা অবশিষ্ট থাকে, তা কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী ফারাইয ও আসাবা’র মধ্যে বণ্টিত হয়।
Author
Publisher Name
RBS Property
Publisher Logo

Join The Discussion

Compare listings

Compare
Open chat
Hello 👋
Can we help you?